নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় মেঘনা নদীতে ট্রলারডুবিতে এখনও এক পুলিশ সদস্যসহ চারজন নিখোঁজ রয়েছেন। অপর তিনজনের মধ্যে দুই রোহিঙ্গা রয়েছেন।আজ রোববার সকালে সুবর্ণচর ফায়ার সার্ভিস অফিসের ফায়ার ফাইটার অনিক কুমার নন্দি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, গতকাল শনিবার দুপুরে হাতিয়ার ভাসানচর থেকে ৩৯ জন যাত্রী নিয়ে একটি ট্রলার হরণী ইউনিয়নের আলী বাজার ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। যাত্রীদের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য, চারজন আনসার সদস্য, বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী ও ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকা কয়েকজন রোহিঙ্গা রোগী ছিলেন। ট্রলারটি ভাসানচর থেকে সাত থেকে আট কিলোমিটার অতিক্রম করে বিকেল ৩টার দিকে হাতিয়ার করিম বাজারের ঘাটের কাছে ডুবোচরে আটকে যায়। এতে তলা ফেটে ট্রলারটি ডুবে যায়। তাৎক্ষণিক নদীতে থাকা অন্য ট্রলারের জেলেরা কয়েকজন যাত্রীকে জীবিত এবং একজনকে মৃত উদ্ধার করেন। পরে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌ পুলিশ এবং যুব রেডক্রিসেন্ট সদস্যরা উদ্ধার কাজে যোগ দেন।
এ পর্যন্ত দুই পুলিশ সদস্যসহ ৩৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মধ্যে এক রোহীঙ্গা নারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুবর্ণচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।এ ছাড়া আরও আট জনকে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়।নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, হাসপাতালে ভর্তি আটজনের মধ্যে পুলিশের এক এসআই, এক কনস্টেবল, একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স ও চারজন রোহিঙ্গা নাগরিক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাতজনের পানিতে ডোবার কারণে বুকে ব্যথা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের সার্বিক অবস্থা ভালো আছে। তবে সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারজানা বিনতে মমিনের ফুসফুসে পানি চলে যাওয়ায় তাঁকে অক্সজেন দিতে হয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশ সদস্য মো. ফরহাদ বলেন, ‘আমাদের ট্রলারটা ভাল ছিল, মাঝিও ভাল ছিল। ট্রলারটা নতুন ছিল। আমরা এইপাশের ঘাটে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। এ সময় মাঝখানে একটা চরে আমাদের ট্রলারটা আটকে যায়। চরের ওপর যখন ট্রলারটা চালানো হচ্ছিল এ সময় কয়েকটা ধাক্কা খেয়েছিল। ধাক্কা খাওয়ার পরে দেখলাম যে হঠাৎ করে ট্রলারের ভেতর থেকে পানি বের হচ্ছে। এর পর একটা ঢেউ আসে এবং ট্রলারটা উল্টে যায়। পরে আমরা যে যার মতো চেষ্টা করে প্রায় দুই ঘণ্টা ভেসে ছিলাম। পরে আমাদেরকে উদ্ধার করার পর ওই ট্রলারে এবং পরে আরও একটি ট্রলারে নিখোঁজদেরকে খোঁজা হয়। আমাদের সঙ্গে থাকা অপর পুলিশ সদস্যকে পাওয়া গেছে কিনা আমি জানি না।’